কাউকে বিয়ে করতে গেলে তার সম্পর্কে আমাদের অনেক কিছুই জানতে হয়। তাই আজকের আর্টিকেলে আপনাদের সাথে শেয়ার করবো কাউকে বিয়ে করতে গেলে আমাদের তার সম্পর্কে কি কি জানতে হবে।
প্রথমত বলবো বিয়ে করলে একটা মেয়ে সম্পর্কে কি কি জানা থাকা দরকার...
১. মেয়েটা কর্মঠ কি না দেখে নিবেন। অলস মেয়ে আপনার জীবন ধংস করে দিবে।
২. মেয়েটা ডিসিপ্লিন মেইনটেইন করে কি না? অর্থাৎ ঠিক টাইমে খাই কি না ঠিক টাইমে ঘুমাই কি না।
৩. মেয়ের কাজকর্ম কে করে দেয়? অর্থাৎ কাপড় চোপড় কে ধুয়ে দেয়? ঘর কে গোছায়? খাবার কে বেড়ে দেয় ইত্যাদী।কারণ মেয়েটা যদি তার নিজের বাড়িতে কোনো কাজ না শিখে বা কাজ করে অভ্যস্ত না থাকে তাহলে সে শশুর বাড়ি এসে কোনো কাজ করতে পারবে না।
৪.মেয়ের চলাফেরার ধরন কেমন সেটা লক্ষ করা দরকার। যেমন তার ড্রেসআপ, গেটআপ।
৫.মেয়ের দুলাভাই , মামাতো ভাই, ফুফাতো ভাই , চাচাতো ভাই ওদের সাথে কথাবার্তার ধরন কিরকম সেটা ও দেখবেন। কারণ মামাতো, ফুফাতো, চাচাতো ভাইদের বা দুলা ভাইয়ের সাথে মেয়েদের সম্পর্কে জুড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থেকে থাকে।
৬. আর সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ন হচ্ছে মেয়ের মা কেমন সেটা দেখা। কারণ আমাদের দেশের বেশির ভাগ মেয়েরাই স্বামীর সংসার করতে পারে একমাত্র তার মায়ের জন্য। যে মেয়ে তার মায়ের পরামর্শে চলে সে মেয়ে কখনো সাংসারিক মেয়ে হতে পারে না । তাই আমাদের উচিত কোনো মেয়েকে বিয়ে করার আগে তার মা সম্পর্কে জানা।
৭. মেয়েটার চাহিদা কেমন? অর্থাৎ সব বিষয়ে তার চাওয়া পাওয়া কেমন? মেয়ের বেশি চাহিদা থাকলে তাকে নিয়ে সংসার করাটা আপনার অনেক কষ্ট হয়ে যাবে।
এবং সর্বশেষ জেনে নিবেন বর্তমানে মেয়েটার কারো সাথে সম্পর্ক আছে কি না।যদি মেয়েটার কারো সাথে সম্পর্ক থেকে থাকে এবং আপনি সেই মেয়েকে বিয়ে করেন তাহলে আপনি সংসার জীবনে খু্বই অসুখী হবেন।
এবার বলবো বিয়ে করলে একটা ছেলে সম্পর্কে কি কি জানা থাকা দরকার?
১. ছেলেটা কোনো খারাপ নেশায় আসক্ত কি না? খারাপ নেশা বলতে আমি এখানে শুধু সিগেরটকে উদ্দেশ্য করিনি।খারাপ নেশা বলতে বুঝিয়েছি গন্জিকা বা ড্রিংক্স জাতীয় কিছু যেটা সেবন করলে সামজিক এবং পারিবারিক অশান্তি শুরু হয়।
২. ছেলের আয় রোজগার কেমন।মোটামোটি চলা যাবে এমনটা হলেও আলহামদুলিল্লাহ।কিন্তু ইনকাম সোর্স যদি একেবারেই না থাকে এবং সে অবস্থায় যদি বিয়ে করেন তাহলে চলার পথটা অনেকটা কঠিন হয়ে যেতে পারে। কারণ একটা সংসার চালানো চারটে খানি কথা না।তাই বিয়ে করতে অবশ্যই ছেলের আয়ের উৎসটাও দেখা জরুরী।
৩. ছেলের বন্ধু মহলটা দেখা আবশ্যক।অর্থাৎ সে কোন ধরনের ছেলেদের সাথে চলাফেরা করে সে বিষয়টা জানা থাকা দরকার। একটা কথা আছে সঙ্গ দোষে লোহা জলে ভাসে।যেকোনো ছেলের সঙ্গ যদি খারাপ হয় তাহলে সে ছেলে যতই ভালোর মুখোশ পরে থাকুক না কেন?সে ভালো না হওয়ার সম্ভাবনা কমই থাকে। তাই অবশ্যই কোনো ছেলেকে বিয়ে করতে হলে তার বন্ধু মহল সম্পর্কে যাচাই করে নিবেন।
৪. রাতে বাড়ি ফিরে কখন? বেশি রাতে বাড়ি ফিরলে বাহিরে কি করে? কারণ কোনো প্রকার কাজ ছারা কোনো ভদ্র ফেমিলির সন্তান অযতা রাতে বাহিরে থাকবে না বা বেশি রাতে বাড়ি ফিরবে না।
৫. পাড়াপ্রতিবেশীদের সাথে তার ব্যাবহার কেমন? এই বিষয়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ অনেক ছেলেরা প্রতিবেশি বা আশেপাশে যারা থাকে তাদের সাথে খারাপ আচরণ করে থাকে। এতে করে শুধু সামাজিক সমস্যাই না পরিবারেও অশান্তি নেমে আসে।
৬. ছেলেটা কতটাকা ইনকাম করে এবং কতটাকা তার ফ্যামিলিতে দেয় সে বিষয়টা ও দেখা দরকার। কারণ অনেক ছেলেরাই আছে যারা কিনা হাজার হাজার টাকা ইনকাম করা সত্বেও তার পরিবারে একটাকা ও দেয় না।সে টাকা সে তার বন্ধু বান্ধব নিয়ে বাজে খরচ করে থাকে।
৭.মেয়েদের প্রতি ছেলেটার কোনো বাজে আসক্তি আছে কি না। কারণ বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় ছেলেরা বিয়ের পর অন্য মেয়েদের সাথে সম্পর্ক রাখতে।আর যে ছেলেদের মেয়েদের প্রতি আসক্তি বেশি থাকে তাদেরকে সে পথ থেকে ফিরিয়ে আনা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। তাই বলবো কোনো ছেলেকে বিয়ে করার আগে অবশ্যই যাচাই করে নিবেন সে ছেলের চরিত্র কেমন অর্থাৎ বাহিরে সে মেয়েদের প্রতি আসক্ত কি না।
সর্বশেষ দেখবেন ছেলেটার ফ্যামিলির সদস্য গুলো কেমন।কারণ আপনি বিয়ের পর শুধু স্বামী নয় পুরো ফ্যামিলি নিয়ে আপনাকে থাকতে হবে।তাই এই বিষয়টা আপনাকে লক্ষ করতে হবে।
একটা মেয়ে তার মা বাবা ,ফ্যামিলি ছেড়ে নতুন একটা সংসারে আসে শুধুমাত্র একটা ছেলের ভরসায় কিন্তু সেই ছেলেটাই যদি ভালো না হয়।সে ছেলেটা যদি তাকে পাত্তা না দেয় অর্থাৎ সবকিছুই তে গুরুত্ব কম দেয় তাহলে সেই মেয়েটার বেচে থাকা খুব কষ্ট হয়ে যায়। বিয়ে হচ্ছে একটা পবিত্র সম্পর্ক । সেই পবিত্র সম্পর্কটা যদি কিছুদিন যেতে না যেতেই ছিন্ন বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় তাহলে দুটি জীবনই নষ্ট হয়ে যায়।আর যদি বিয়ের পর একটা বাচ্চা হওয়ার পর সংসার বিচ্ছিন্ন হয় তাহলে শুধু একটা ছেলে আর একটা মেয়ের জীবনই নষ্ট হয় না সাথে বাচ্চাটির জীবন ভবিষ্যৎ অচিরেই নষ্ট হয়ে যায়। তাই আমাদের উচিত একজন সঠিক মানুষ বেছে নেওয়া। কারণ একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে বিয়েটা একদিন আর দুদিন এর না, বিয়েটা সারাজীবনের জন্য। আবেগের বশে একজন ভুল মানুষ কে বিয়ে করে যেন সারাজীবন কষ্ট ভোগ করতে না হয় সেটা লক্ষ রাখবেন।
বিয়ের ক্ষেত্রে ছেলেদের কোন দিক এবং মেয়েদের কোন দিক দেখতে হয় আমি উপরোক্ত বিষয়ে দেখিয়েছি। এই উপরোক্ত বিষয় ছাড়া আরো অনেকগুলো বিষয় আছে ,যেগুলেঅ আমরা ব্যাক্তিগত ভাবে একটা মানুষকে যাচাই করে জীবন সঙ্গী করতে পারি।কারণ সবার এই কিছু ব্যাক্তিগত পছন্দ অপছন্দ আছে। তাই বলবো আপনারা নিজেরা নিজেদের মতো করেও পছন্দের মানুষকে যাচাই করে বিয়ে করতে পারেন।
পরিশেষে বলবো সবার জীবন সুন্দর হোক এবং সবার জীবনে একটা সঠিক মানুষ আসুক।